সিজোফ্রেনিয়া কি?
সিজোফ্রেনিয়া একটি জটিল মানসিক রোগ। এ রোগের লক্ষণ হচ্ছে– চিন্তাধারা এবং অনুভূতি প্রকাশের মধ্যে অসঙ্গতিই হলো সিজোফ্রেনিয়া।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণগুলি হল ডিলিউশন এবং হ্যালুসিনেশন অর্থাৎ ভুল ধারণা, অবাস্তব চিন্তাভাবনা, অকারণ সন্দেহ, বিভ্রান্তি, বিড়ম্বনা ইত্যাদি।
পরিবারের কেউ বা পরিচিতজনরা,আপনজনদের কেউ তার খাবারে বিষ মিশিয়ে দিচ্ছে,তার জীবনে ধ্বংস ডেকে আনছে বা আনার কারণ ব্যক্তি কেউ এক বা কোনো একজন বা কয়েকজন – এমন সন্দেহ করে থাকেন এই রোগীরা। এ ছাড়া আরও অমূলক সন্দেহ করে থাকেন তারা। এ ধরনের রোগীদের নিয়ে সাধারণত পরিবারের লোকেরা খুব সমস্যায় পড়ে যান। রোগীর অদ্ভুত আচরণগুলো মানিয়ে নিতে বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।
এ ধরনের রোগীরা কতগুলো অবাস্তব দৃশ্য দেখার দাবি করেন। অবাস্তব স্পর্শ অনুভূতির কথা বলেন। তার চামড়ার ভেতরে পোকা হাঁটহাঁটি করছে। কিছু রোগীকে বলতে শোনা যায়, পেটে ও মাথায় পোকা কিলবিল করছে।
সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত সব রোগীর লক্ষণ এক হয় না। লক্ষণগুলি রোগীর ওপর নির্ভর করে।
কোনও কোনও রোগীর ক্ষেত্রে এই রোগের লক্ষণগুলি কয়েক মাস বা বছর ধরে ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করতে পারে বা হঠাৎ করে দেখা দিতে পারে।
সর্বশেষ ২০২১ সালে সিজোফ্রেনিয়া নিয়ে গাইডলাইন তৈরির যে ওয়ার্কিং কমিটি হয় তার একজন সদস্য ডা. মো. ফারুক হোসেন বলেন, এই রোগের কিছু লক্ষণ হল :
সিজোফ্রেনিয়া রোগের লক্ষণ
একা একা কথা বলা, চুপচাপ থাকা, কারও কথার জবাব না দেওয়া, কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করলে উত্তর না দেওয়া, কানে অলিক কথা শোনা, অসংলগ্ন কথা বলা, প্রতিদিনের কাজ সঠিকভাবে না করা, ভ্রান্ত বিশ্বাস, অহেতুক সন্দেহপ্রবণতা (ডিল্যুশন), অবাস্তব চিন্তাভাবনা, অসংলগ্ন কথাবার্তা ইত্যাদি সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ। এ ছাড়া এর মধ্যেও আরও কিছু লক্ষণ হচ্ছে- অনাগ্রহ, চিন্তার অক্ষমতা, আবেগহীনতা ও বিচ্ছিন্নতা।
এছাড়াও
১ রোগী এমন কিছু শুনতে পায় বা দেখতে পায় যেটা বাস্তবে থাকে না
২ কথা বলা বা লেখায় অদ্ভুত বা অযৌক্তিক ধরন বা আচরণ
৩ গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে উদাসীন বোধ করা
৪. নিজের যত্ন নেয়ার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়া
৫.কোন কাজে মনযোগ না থাকা
৬. আবেগ, অনুভূতি কমে যাওয়া।স্কিকৎজোফ্রেনিয়া কি?
সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত সব রোগীর লক্ষণ এক হয় না। লক্ষণগুলি রোগীর ওপর নির্ভর করে।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কিকৎজোফ্রেনিয়ার বা সিজোফ্রেনিয়া লক্ষণগুলি হল ডিলিউশন এবং হ্যালুসিনেশন অর্থাৎ ভুল ধারণা, অবাস্তব চিন্তাভাবনা, অকারণ সন্দেহ, বিভ্রান্তি, বিড়ম্বনা ইত্যাদি।
কোনও কোনও রোগীর ক্ষেত্রে এই রোগের লক্ষণগুলি কয়েক মাস বা বছর ধরে ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করতে পারে বা হঠাৎ করে দেখা দিতে পারে।
এই গাইডলাইন তৈরির যে ওয়ার্কিং কমিটি তার একজন সদস্য ডা. মো. ফারুক হোসেন বলেন, এই রোগের কিছু লক্ষণ হল :
১ রোগী এমন কিছু শুনতে পায় বা দেখতে পায় যেটা বাস্তবে থাকে না
২ কথা বলা বা লেখায় অদ্ভুত বা অযৌক্তিক ধরন বা আচরণ
৩ গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে উদাসীন বোধ করা
৪. নিজের যত্ন নেয়ার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়া
৫.কোন কাজে মনযোগ না থাকা
৬. আবেগ, অনুভূতি কমে যাওয়া বা এককেন্দ্রিক হয়ে যাওয়া।
সিজোফ্রেনিয়ার কারণ :
এই রোগের সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে, যে যে কারণগুলিকে এই রোগের জন্য দায়ী করা হয়, সেগুলি হল- জেনেটিক বা বংশগতভাবে এই রোগ থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও তা দেখা যায়। বাবা, মা-এর কারো এই রোগ থাকলে সন্তানেরও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
চিকিৎসকরা বলছেন জেনেটিক ইনফ্লুয়েন্স থাকে ৮০ শতাংশ। বাবা- মা দুজনের এই রোগ থাকলে সন্তানের হওয়ার সম্ভাবনা ৪০গুণ বেড়ে যায়। জমজ বাচ্চার একজনের থাকলে আরেকজনের ঝুঁকি ৫০ গুণ বেশি থাকে।
এছাড়া সন্তান মাতৃগর্ভে থাকার সময় কোন সমস্যা হলে বা জন্মের সময় কোন ক্ষতি হলে বা অক্সিজেনের অভাব হলে এই রোগ হতে পারে। চাইল্ডহুড ট্রমা , সেনসেটিভ পারসোনালাটি হলে তার সঙ্গে কোন ভয়াবহ ঘটনা ঘটলে ঐ ব্যক্তির স্কিকৎজোফ্রেনিয়া হতে পারে।
চিকিৎসা কী:
ডা. মো. ফারুক হোসেন বলেন ওষুধ দিয়েই মূলত রোগটিকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
“প্রথমে এ্যান্টি সাইকোটিক মেডিসিন, এরপর সাইকোথেরাপির দিকে যেতে হয়। ৮০ভাগ রোগী কিছু দিন ভালো, কিছু দিন খারাপ থাকে। অর্থাৎ সম্পূর্ণ ভালো হয় না। বাকি ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ঠিক হয়ে যায়।”
তিনি বলেন , এই রোগীদের মৃত্যুর হার বেশি কারণ তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়: “পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ সুইসাইড করে।”
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইক্রিয়াট্রিস্ট বলছে এই গাইডলাইন কার্যকর করার জন্য প্রশাসনিক ও লজিস্টিক সার্পোট লাগবে। তার জন্য মন্ত্রণালয়ের সাহায্য লাগবে। চিকিৎসকরা বলছেন, যেকোন উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনামূলক বিচারে এটাকে একটা আন্তর্জাতিক মানের গাইডলাইন করা হয়েছে।
ডা. সাঈদ এনাম
Leave a Reply