।। আজ সারাদিন প্রতিবেদক।।
মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন রাজধানীর বৃহত্তর ডেমরা ও যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দারা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৩,৬৪,৬৫,৬৬ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা ও যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা থানার যাত্রাবাড়ী মৎস্য আড়ত,দক্ষিন যাত্রাবাড়ী,বাশপট্টি,শনির আখড়া, দনিয়া,একে স্কুল,গ্যাসরোড,রায়েরবাগ
মাতুয়াইল মেডিকেল,নিমতলা কদমতলা,আদর্শবাগ, মোমেনবাগ চৌরাস্তা,ফার্মের মোড়,
মুসলিম নগর, মোঘলনগর,বটগাছিয়া বাজার, পুরান মসজিদ ও ও কোনাপাড়া
ঘুরে দেখা গেল এমন বেহাল দশা।
ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনা,সময়মতো পয়ঃনিষ্কাশন না করা,ড্রেনে যত্রতত্র ময়লা ফেলা ও ড্রেন থেকে পানি অপসারণের রাস্তা বন্ধ থাকায় মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৬৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাসুদুর রহমান মোল্লা বাবুল জানান, প্রতিদিনই মশক নিধনের ওষুধ ছিটানো হচ্ছে তবে এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি কোন উত্তর দেননি।
৬৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামসুদ্দিন ভূইয়া সেন্টু আজ সারাদিনকে জানান,
প্রতিনিয়ত স্থানীয় বাসিন্দাদের অসচেতনতা,অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণের ফলে জমে থাকা পানিতে মশার বংশ বিস্তার লাভ করেছে।
তিনি জানান, তার ওয়ার্ডে শত শত একর জলাশয়ে পানি জমে আছে যা নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উল্লেখ্য বিশ্বরোড সংলগ্ন খালকে তিনবার খনন করার পরেও আবাসন নির্মাণ সামগ্রী পাইলিং এর মাটি ফেলার ফলে পানি জমে, যেখান থেকে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।তিনি আরো জানান মশা নিধনে ঔষধ প্রয়োগ করা হচ্ছে প্রতিদিন।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ মশার ঔষধ মাঝে মাঝে ছিটানো হলেও তার কার্যকরীতা নেই!
মুসলিমনগর ৩ নং গলির বাসিন্দা সজলের সাথে কথা বললে জানা যায়,
দিনের বেলায়ও আমাদের মশারি টাঙিয়ে থাকতে হয়।গত দুদিন আগে ২ বছরের শিশু সাফওয়ানকে নিয়ে মাতুয়াইল আইসিএমএইচ এ আসতে হয়েছে তাকে।
এ ব্যাপারে বাড়ির মালিকদের মতামত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি দের কাছে বারবার ঘুরেও মশা নিবারণে কোন সুরাহা পাননি তারা।
৬৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জলিল হাওলাদার জানান, তার বাড়ির পাশে নতুন ভবন উঠায় সেখানে খাদে পানি জমে মশার লার্ভা জন্ম হয় যার ফলে মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছেন তারা।
তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি তার তিক্ত অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বলেন তাকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ( মিটফোর্ড) হাসপাতালে সাত দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে হয়েছে।
মাতুয়াইল মেডিকেল কলেজ রোড মসজিদে দিনের বেলায় মশার কয়েল জ্বালিয়ে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে মুসল্লিদের।
মাতুয়াইল মেডিকেলের ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম জানান গত ছয় মাসেও অত্র এলাকায় মশক নিধনের কোন কীটনাশক ছিটানো বা কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
উল্লেখ্য সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ, রোকেয়া আহসান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ,মাতুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় সহ প্রায় ৫০ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে এই এলাকায়। যেখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পড়াশোনা করতে হচ্ছে।
এখানে গড়ে উঠেছে ব্রাইট প্রিন্টিং প্রেস, প্রোমা প্রিন্টিং প্রেস, গ্লোবাল প্রিন্টিং প্রেস, মানামা প্রিন্টিং প্রেস, ভাই ভাই প্রিন্টিং প্রেস,জনতা প্রিন্টিং প্রেস, মৌসুমী প্রিন্টিং প্রেস,এস এস প্রিন্টিং প্রেস, বর্ণালী প্রিন্টিং প্রেস,সোনালী প্রিন্টিং প্রেস
সহ প্রায় একশত প্রকাশনা প্রিন্টিং প্রেস রয়েছে যেখানে দুই হাজার এর অধিক লোক প্রতিনিয়ত কাজ করছেন।প্রকাশনা শ্রমিকরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন বলে উল্লেখ করে
ব্রাইট প্রিন্টিং প্রেসের ইনচার্জ রাশেদুর রহমান জানান প্রতিনিয়ত মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ ও নানারকম মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায়ই শ্রমিকদেরকে হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে।
তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
এছাড়া গার্মেন্ট শিল্প,চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন শিল্প, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি তৈরি কারখানা,
সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে এখানে।যেখানে শ্রমিকদেরকেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।
রয়েছে হাসপাতাল, ক্লিনিক, নার্সিংহোম যেখানে কতৃপক্ষ ও রোগীরাও মশাবাহিত রোগ থেকে নিরাপদ নয়
তবে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা বহুতল ভবনের মালিকদের কেউ দায়ী করেন এখানকার স্থানীয়রা।
রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে মাঠপর্যায়ে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত জনপ্রতিনিধিদের অবহেলার ফলে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মাতুয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও ৬৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি পদপ্রার্থী ও সামাজিক সংগঠন প্রকৃতি’র উপদেষ্টা মোঃ হুরুন অর রশিদ।
এছাড়াও তিনি সুপরিসর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা জরুরি বলে মনে করেন ।
এজন্য তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়ার দ্বাবি জানান।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে একাধিকবার ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।
বিস্তারিত আগামী পর্বে….
Leave a Reply