।।আমিনুল ইসলাম।।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে অগ্নিসংযোগ করে তাবৎ আল্লাহদ্রোহী শক্তিগুলো বিশ্বব্যাপী অশান্তির দাবানল জ্বালিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন,
সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে এবং ডেনমার্কে পবিত্র কুরআন পোড়ানোর এ ঘটনা সারাবিশ্বের মুসলমানদের মনে আঘাত দিয়েছে।তারসাথে শিক্ষা সাংস্কৃতির মধ্যে ভূল অসত্য তথ্য প্রকাশ করে বিশ্বের দ্বিতীয় মুসলিম প্রধান দেশ বাংলাদেশে অশান্তির দাবানল ছড়িয়ে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রপ্রধানকে ধ্বংসের পায়তারায় মত্ত।
তিনি উল্লেখ করে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী আওয়ামী লীগ প্রধান ও সরকার প্রধানকে নিয়ে ও এই মহল বিভ্রান্তি ছড়িয়ে কৌশলী ষড়যন্ত্র করতেছে।কৌশলে আওয়ামী লীগের মধ্যে থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিপক্ষে দেশের মানুষের ক্ষোভ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন” মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি সময় থাকতে এদের চিনুন।এরা আপনার পাশে থেকে আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।এই রাম পন্থী আর বামপন্থীদের ষড়যন্ত্র থেকে নিজে বাঁচুন,দেশের মানুষকে রক্ষা করুণ। ”
কুরআন অবমাননাকারী গোষ্ঠী বিশ্বশান্তির জন্য মারাত্মক হুমকির। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সেইসাথে বাংলাদেশ সরকারকে সংসদে নিন্দাপ্রস্তাব পাশ করতে হবে এবং রাষ্ট্রদূতদের ডেকে প্রতিবাদ জানাতে হবে।
আজ শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ডেনমার্ক ও সুইডেনে পবিত্র কোরআনে অগ্নিসংযোগ এবং
পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক উস্কানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, ধর্ম বিরোধী মতবাদের অনুপ্রবেশ, বিজাতীয় সংস্কৃতির আধিপত্য ও
ইসলামকে হেয় করার প্রতিবাদ এবং পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করার দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, শিক্ষা সিলেবাসের অসঙ্গতি, ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন করে
আসছি। আমাদের এ ধারাবাহিক কার্যক্রমকে শিক্ষামন্ত্রী ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে মিথ্যাশ্রয়ী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছিলো। এখন
শিক্ষামন্ত্রীই মিথ্যুক প্রমাণিত হয়েছেন। এখন আবার পাঠ্যবই নিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষামন্ত্রী।
আমরা বলে দিতে চাই, শিক্ষামন্ত্রী নিজেই প্রতিহত হয়ে যাবে।
শায়খ চরমোনাই বিশেষভাবে বলেন তিনি বলেন এই রামপন্থী আর বামপন্থী শেখ হাসিনার মাথায় কাঠাল রেখে কাঁঠাল খাচ্ছে। সুযোগ নিয়ে তার বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র করছে,দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে নিয়ে গিয়ে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার নেশায় মত্ত।
তিনি বলেন, ২০২৩ এর মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে জনগণের বোধ-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক
উস্কানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক মানব সৃষ্টিতত্ত্ব অনুপ্রবেশ, ট্রান্সজেন্ডার, পৌত্তলিক ও ব্রাহ্মণ্যবাদী
সংস্কৃতির আধিপত্য, ইসলামকে ভিনদেশি সাব্যস্ত করা এবং প্লেজারিজমের মত নিন্দনীয় কাজের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে; যা জাতি হিসাবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশার।
শায়খে চরমোনাই বলেন, সুইডেন সরকারের কাছ থেকে দেশটির উগ্র-ডানপন্থি রাজনীতিবিদ রাসমুস পালুদান তুরস্কের দূতাবাসের সামনে পবিত্র কুরআন পোড়ানোর অনুমতি নেওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে। সৌদি আরব, তুরস্ক, জর্ডান, কুয়েত, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে এই ন্যক্কারজনক ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। অথচ বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও এখনও চুপচাপ বসে আছে। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা শুনে
কোন মুসলমানের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ না হয়ে পারে না। তাই কুখ্যাত এই চরমপন্থি ধর্ম অবমাননার নিকৃষ্ট কাজের জন্য বাংলাদেশ
সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানান তিনি।
মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, কারো ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করার অধিকার কারও নেই। শিক্ষা সিলেবাসে আমূল পরিবর্তন আনা
হয়েছে। ইসলামী শিক্ষাকে সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ডারউইনের নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা শেখানো হচ্ছে কোমলমতি
শিশুদের। ছাত্রছাত্রীদের নাস্তিক বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এসময় তিনি ইসলামবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত থেকে
সরকারকে ফিরে আসার আহ্বান জানান।
বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর
উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন
সমাবেশে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ আমিনুল
ইসলাম,ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল
কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, ঢাকা মহানগর উত্তর সেক্রেটারি মাওলানা আরিফুল ইসলাম, দক্ষিণ সেক্রেটারী ডা. শহিদুল ইসলাম প্রমূখ ।
সবশেষে ভূল পাঠ্যপুস্তক অবিলম্ভে বাতিল করা ও পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর সাথে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি সহ এদের কাছ থেকে এই ক্ষতিপূরণ আদায় করার দ্বাবি জানান মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম ।
Leave a Reply