।। আমিনুল ইসলাম।।
টানা তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে দেশ পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয় লাভ করে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি দলটি সরকার গঠন করে। আজ তিন মেয়াদের চার বছর পূর্ণ করলো সরকার। এসময়ের মধ্যে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আর এ কাজে তাকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন মস্ত্রিসভার একাধিক সদস্য। যারা সরকারের লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন-
১. ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী: ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী দায়িত্ব নিয়েই বলেছেন যে, তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়কে টপ ফাইভে নিতে চান। আর তার এ ঘোষণা অনুসারে তিনি কাজও করে যাচ্ছেন। দায়িত্ব পালনের চার বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। অথচ এখন পর্যন্ত কোন দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ কেউ তুলতে পারেনি তার বিরুদ্ধে বা তার মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে। ভূমি মন্ত্রণালয়ে তিনি আধুনিকতার ছোঁয়া দেখিয়েছেন। গত চার বছরে মানুষের আস্থা অর্জনে সফল হয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। বর্তমান ভূমি মন্ত্রণালয়ের ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে ভূমিসংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার প্রভূত উন্নতি হয়েছে। অনলাইনে সহজেই এখন জমির নামজারির আবেদন করা করা। অর্থাৎ দেশের পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনা এখন ডিজিটালাইজড হয়েছে।
২. স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল: মন্ত্রিসভার সফল মন্ত্রীদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল অন্যতম। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। এর আগের মেয়াদে তিনি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে থাকলেও তার কর্ম দক্ষতার জন্য তিনি পূর্ণ মন্ত্রিত্ব পান। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে রাখা, জঙ্গীবাদ দমন ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তার দৃঢ় অবস্থান তাকে সফলদের তালিকায় অন্যতম করেছেন। দেশের আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতিও এখন উন্নত হয়েছে।
৩. মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম হলেন মন্ত্রিসভার সেই সদস্যদের একজন যিনি বিভিন্ন টকশোতে অংশগ্রহণ করে সরকার সম্পর্কে সঠিক তথ্যগুলো উপস্থাপন করছেন এবং বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি নীতিনির্ধারণী বক্তব্য রাখছেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী হিসেবে তিনি বর্তমান মন্ত্রিসভার সবচেয়ে সফল মন্ত্রীদের একজন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর উদ্যোগে প্রাণিদের জন্য ভ্রাম্যমান অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে বলা হয় এমভিসি বা মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক। এটির মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকায় কোনো প্রাণী অসুস্থ হলে তার চিকিৎসার জন্য এই ভ্রাম্যমান ক্লিনিকটি তার বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে এবং তার সেবা দেবে। এছাড়া তিনি ভ্রাম্যমান বিক্রয়কেন্দ্র চালু সহ মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিকও চালু করেছেন। তার নেতৃত্বে মাছ উৎপাদনে দেশে বিপ্লব ঘটেছে। দেশে মাছ-মাংস, দুধ-ডিম সবার জন্য সহজলভ্য হয়েছে।
৪. তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ: সফলদের তালিকায় শক্ত অবস্থান দখল করে নিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। দায়িত্ব গ্রহণ করেই তথ্য মন্ত্রণালয়কে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে এনেছেন। বিশেষ করে বিদেশি চ্যানেল গুলোর ব্যাপারে তার আইনানুগ কঠোরতা আরোপ এবং অনলাইন মিডিয়া গুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। সম্প্রতি দলের কাউন্সিলেও তিনি এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন। মন্ত্রী হিসাবে এবং সংগঠক হিনেবে তিনি দলীয় প্রধানের আস্থা অর্জন করেছেন।
৫. কৃষি মন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক: কৃষি এ দেশের অর্থনীতির এক অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত। আর বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের সফল মন্ত্রীর তালিকায় নাম লিখিয়েছেন ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ আরও গতিশীল করা এবং ডিজিটাল কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। কৃষিমন্ত্রী একজন কৃষিবিদ, কৃষি গবেষক ও কৃষিতে উচ্চশিক্ষিত হওয়ায় এ কাজটি করা তার পক্ষে আরো সহজ হয়েছে। করোনাকালে সব কিছু স্থবির হয়ে পড়লেও কৃষির উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শ এবং নির্দেশে তিনি সক্রিয় ছিলেন। যে কারণে করোনাকালীন সব উৎপাদন ব্যবস্থা ধাক্কা লাগলে দেশে খাদ্য ঘাটতি হয়নি। এখন ২০২৩ সালে বিশ্বে খাদ্য মন্দার কথা বলা হলেও বাংলাদেশে তার প্রভাব নেই বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
Leave a Reply