ডঃ সৌমিক দাস
সে প্রায় বছর তিরিশ আগেকার কথা। তখন গান গাইতাম না, লিখতামও না। শুধু শুনতাম। সেই মধ্যবিত্ত মধ্যমেধার বাচ্ছা ছেলেটার মনে রবীন্দ্রনাথ বা নজরুল নয়, এই লোকটা আগুন জ্বালিয়েছিল সামাজিক ও প্রতিষ্ঠান বিরোধী গান লেখার। সুমন, সলিল, সিগার, রবসনদের অনেক পরে শুনেছি।
এই লোকটা সরকারি অফিসের কর্ম সংস্কৃতি নিয়ে লিখেছিলেন-
বারোটায় অফিস আসি দুটোয় টিফিন
তিনটেয় যদি দেখি সিগন্যাল গ্রীন
জুতোটা গলিয়ে পায়ে নিপাট নির্দ্বিধায়
চেয়ারটা কোনমতে ছাড়ি
কোন কথা না বাড়িয়ে ধীরে ধীরে পা বাড়িয়ে
চারটেয় চলে আসি বাড়ি
আমি সরকারি কর্মচারী
আপনি এক সুস্থ সময়ে গান পরিবেশন করতে পেরেছেন, যেখানে বাম আমলের সরকারি অফিসের কর্মসংস্কৃতি নিয়ে গান লেখার জন্য আপনার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক খাপ পঞ্চায়েত বসেনি, বরং অধিকাংশ কলেজ সোশ্যালে আপনিই গাইতেন, সমাদৃত হতেন। এবং সেটাই হওয়া উচিত, কারণ শিল্পীরাই সমাজের আয়না।
মানুষ পরিবর্তনশীল। লোকে বলে আপনি বদলেছেন। আমি এত কিছু জানিনা। আপনার জীবন, আপনি সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আপনার গান শুনে যে ছোট ছোট স্ফুলিঙ্গের জন্ম হয়েছিল, তারা আজ আগুনের মত ছড়িয়ে পড়লে আপনি তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না এটাও সত্যি। অনেক লোক আপনাকে নিয়ে খারাপ কথা বলে, আমার কিন্তু কষ্টই হয়। আজও যে আপনার পঞ্চাশটা গান গড়গড় করে মুখস্ত গাইতে পারি।
আপনার উত্তরবঙ্গের সঙ্গীত সফর ভাল কাটুক।
ফাটিয়ে শো কোরো গুরু
তুমি তখনও গেয়েছ, এখনও গাইছ। এ সবার কপালে জোটে না
Leave a Reply