।।ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম।।
সেই কৈশোরে ঠুনকো এক ঝগড়ায় বন্ধুত্ব ভেঙে গিয়েছিল। কথা বন্ধ, বন্ধ মুখ–দেখাদেখি। রাস্তায়-গলিতে, খেলার মাঠে, আড্ডায়—তাকে দেখলেই আলগোছে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া। এরপর ধীরে ধীরে পেরিয়ে গেল বছর পনেরো।
একদিন হুট করে দেখা হয়ে গেল পুরোনো এক বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠানে। দুজনই অপ্রস্তুত, অপ্রতিভ। নিষ্পলক তাকিয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ।
তারপর! না, আর পারা গেল না। হাত বাড়িয়ে দিলেন একজন। চওড়া হাসিতে ভরে গেল অন্যজনের মুখ। জড়িয়ে ধরলেন পরস্পরকে। আহ, কত দিন পর! কেমন আছিস বল তো! গলা ধরে আসা জিজ্ঞাসায় অন্যজনের মনও মুহূর্তে দ্রবীভূত হয়ে এল যেন!
একঝটকায় দূর হয়ে গেল পনেরো বছরের পুঞ্জীভূত অভিমান। ভেঙে গেল সংকোচের অদৃশ্য দেয়াল। এরপর শুরু হলো কথা। কত কত কথা! যেন শেষই হওয়ার নয়। যুগান্তরের জমানো আলাপ!
এমন কত বন্ধুত্ব ফুরিয়ে গেছে শৈশবে-কৈশোরে। ছোট-বড় অদ্ভুত সব কারণে ছিন্ন হয়ে গেছে নির্মল সম্পর্ক। কত আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তৈরি হয়েছে মুখ না দেখাদেখির দূরত্ব। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও এমন একটু একটু করে ছিঁড়ে যায় সম্পর্কের সুতো। অথচ জীবনটা কত ছোট!
আজ ১০ সেপ্টেম্বর, ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক জোড়া লাগানোর দিন, ইন্টারন্যাশনাল মেক–আপ ডে।
কবে কীভাবে দিবসটির চল হয়েছে, জানা যায় না। তাতে কী! এমন একটি সুন্দর দিন কিন্তু পালন করা যেতেই পারে। আত্মীয়পরিজন, বন্ধুবান্ধব কিংবা সহকর্মী—কার সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরেছে?
একেবারেই সম্পর্ক ভেঙে গেছে কার সঙ্গে? তাতে কার কতটুকু দোষ ছিল, আপনার দায় কতটুকু, এসব ভাবনা নাহয় থাক। আগ বাড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দিন।
তিক্ত অতীত ভুলে জড়িয়ে ধরুন। সম্পর্ক ভাঙায় যার ভূমিকা যতটুকুই থাক, জোড়া লাগানোয় মূল ভূমিকা আপনারই হোক।
বছরের ৩৬৫ টি দিনের মধ্যে মা দিবস, বাবা দিবস ভ্যলেন্টাইন্স ডে, ফ্রেন্ডশিপ ডে সহ আরো অনেক অনেক বিশেষ দিবস আমরা অনেকেই ঘটা করে পালন করি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, পারিবারিক বলয়ে কিম্বা বন্ধুদের সাথে দলবেঁধে, আবার, ভালবাসার মানুষটির সাথে একান্তে।
ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম
লেখক-কলাম লেখক,সামাজিক নেতৃত্ব।
Leave a Reply