নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
★ইতিহাসের এই দিনে প্রথম ওড়ে বাংলাদেশের পতাকা।
মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস। এ মাসেই অকুতোভয় ছাত্র-জনতা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ, নিপীড়ন আর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিশ্বের মানচিত্রে আমাদের জাতীয় পতাকাকে দাঁড় করাতে। ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস ২ মার্চ। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এই পতাকা আমাদের স্বাধীনতার চেতনার প্রতীক। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের বিরুদ্ধে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা ও ডাকসু নেতাদের উদ্যোগে ২ মার্চ সাড়া দিয়েছিল আমজনতা। প্রকৃতপক্ষে সেদিনের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়েই বাঙালি ছাত্র-জনতা স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্নিমন্ত্রে উজ্জীবিত হয় এবং স্বাধীনতা অর্জনের পথে যাত্রা শুরু করে। পতাকা উত্তোলনই জানান দেয় স্বাধীন বাংলাদেশের বিকল্প নেই। এই পতাকা উত্তোলন আমাদের ভূখ- ছাড়িয়ে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছে একটি শোষিত ও বঞ্চিত দেশের অধিকার এবং স্বাধিকার আদায়ের বিপ্লবের সূচনা বার্তা। দীর্ঘ ৯ মাসের বহু ত্যাগ, রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ৯ মাস এই পতাকাই বিবেচিত হয় আমাদের জাতীয় পতাকা হিসেবে।
১৯৭১ – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে ছাত্র সমাবেশে প্রথমবারের মতো ওড়ানো হয় বাংলাদেশের পতাকা। ওই পতাকাটি বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় পতাকার মতো দেখতে হলেও, এর মাঝখানের লাল বৃত্তের মধ্যে হলুদ রঙে আঁকা ছিল বাংলাদেশের মানচিত্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এই নকশার পতাকাটিই ব্যবহৃত হয়।
সেদিনের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়েই এদেশের ছাত্র-জনতা স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্নিমন্ত্রে উজ্জীবিত হয় এবং স্বাধীনতা অর্জনের পথে যাত্রা শুরু করে। অনুভব করে বাংলাদেশ নামের একটি পৃথক রাষ্ট্রীয় সত্তার। সবার মনে জানান দেয় স্বাধীন বাংলাদেশের কোনো বিকল্প নেই।
লাল-সবুজের পতাকা বাংলার মাটিতে প্রথম উত্তোলন করেন তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ । পতাকাটি এঁকেছিলেন শিবনারায়ণ দাশ। পতাকা তৈরির জন্য কাপড় দিয়েছিলেন ঢাকা নিউমার্কেটের অ্যাপোলো টেইলার্সের মালিক বজলুর রহমান লস্কর।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ তাঁর বাসভবনে এ পতাকা উত্তোলন করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে লাল-সবুজের মাঝখান থেকে মানচিত্রের অংশটি বাদ দিয়ে কামরুল হাসান যে রূপ দান করেন সেইটিই বর্তমানের জাতীয় পতাকা। প্রতিবছর এই দিনটিকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
Leave a Reply