শাহনাজ পারভীনঃ
রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ হঠাৎ করে বিশাল জনসমূদ্রে পরিনত হলো।ত্যাগী নেতা কর্মীদের উপচে পরা ভীর ঠেলে কাছে যেতেই চোখে পরে সোহেল কে।আমি দ্যাখামাত্রই ওকে বুকে জড়িয়ে ধরি।আবেগাপ্লুত হয়ে যাই, চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না।দুচোখ ছলছল করছিলো। ঠিক এমনটাই বলেছিলেন মহনগর আওয়ামী লীগের এক নেতা।সোহেল শাহরিয়ার কে নিয়ে অনেকেই এমন আবেগাপ্লুত কণ্ঠে মনের ভাব প্রকাশ করেন।
কে এই সোহেল শাহরিয়ার-জানা যায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দিন নিজের জীবন বাজি রেখে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে যে ছেলেটির অবদানঅনস্বীকার্য, নিজে আহত হয়েও রক্তমাখা শরীরে দলের বর্তমান সাধারণ
সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাবের হোসেন চৌধুরী,কে নিরাপদে নিয়ে চিকিৎসার জন্য এম্বুলেন্সে তুলে দেয়া সেদিনের সেই সাহসী কিশোর ছাত্রনেতা সোহেল শাহরিয়ার।
আওয়ামী পরিবারেই সোহেল শাহরিয়ার বেড়ে উঠা। ৯ম-১০ম শ্রেণিতে পড়ালেখা অবস্থাই তিনি শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদে কাজ করেন। তখন এই সংগঠনের ঢাকা মহানগরের দায়িত্ব পালন করে সোয়েব খান ও শারমিন সুলতানা সালমা। ১৯৯৭ সালে সোহেল শাহরিয়ার রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এরপর ২০০২ সালে তিনি বৃহত্তর মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভোটে নির্বাচিত হয়।
জানা যায়, তখন আওয়ামীলীগ বিরোধী দলে থাকায় সরকারি দল বিএনপির হাতে অনেক অত্যাচর ও নিযার্তনের শিকার হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে কারাবন্দী হয়েছেন কয়েক বার। শুধু তাই নয় পল্টন হত্যা মামলায় ( লগি বৈঠা)তিনি আসামি ছিলেন। আর ও জানা যায় যে, পল্টন হত্যা মামলায় যে সম্পূরক মামলা করা হয় সেখানেও তাকে শেখ হাসিনা’র সাথে মামলার আসামি করা হয়। গ্রেনেড হামলার দিন ও তিনি উপস্থিত ছিলেন ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সাবের হোসেন চৌধুরী ‘র সঙ্গে। তাকে সেই দিন বিভিন্ন নেতা কর্মী কে উদ্ধার করতে দেখা যায়।২৩ আগস্ট আসলেই বিভিন্ন মিডিয়ায় তার রক্তমাখা সার্ট পরে সাবের হোসেন চৌধুরী ও শুরঞ্জিত সেন গুপ্তের পাশে দেখা যায়। আরো জানা যায় যে গ্রেনেড হামলার পরের দিন সোহেল শাহরিয়ার কে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাকে গ্রেনেড হামলার তদন্ত কমিটির মুখোমুখি করা হয় ও তার উপর বিভিন্ন অত্যাচার ও নির্যাতন চালানো হয়। আওয়ামীলীগ এর সাবেক সাধারণ সমপাদক আব্দুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরীর প্রচেষ্টায় তিনি মুক্ত হন। ১/১১ তিনি আবারও গ্রেপ্তার হন।১/১১ এ দেশরত্ন শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হবার আগে যে কারা নির্যাতিত ছাত্রনেতাদের পরিবারের সঙ্গে দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেখা করেন সেখানে তার মা ও বোন উপস্থিত ছিলেন।নেত্রী মুক্তি আন্দোলন সহ প্রতিটি আন্দোলনেই তার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। ১/১১ এর সময়ও নেত্রীর মুক্তি আন্দোলন করেও জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সোহেল বলে জানান আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা । আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার পর সোহেল শাহরিয়ার অত্যাচার নির্যাতন থেকে রেহাই পায়নি। অাওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশকারী খালেদের অত্যাচার শুরু হয় তার ওপরে। শুধু তাই নয় মতিঝিল, শাহজাহানপুর, রামপুরা, সবুজবাগ, খিলগাঁও, মুগদা এলাকার পুরো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে একক আধিপত্য বিস্তার করতে সোহেল শাহরিয়ার এর সমর্থক, অনুসারী ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতা কর্মী কে অত্যাচার নির্যাতন করতে থাকে। খালেদ এক পর্যায়ে সোহেল শাহরিয়ারকে দেশে থাকলে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিলে আওয়ামী লীগ এর একজন নেতার হস্তক্ষেপে ২০১১ সালে স্ত্রীসহ কানাডায় গিয়ে আশ্রয় নেন সোহেল শাহরিয়ার।
২০১৩ তে সোহেল শাহরিয়ার টরেন্টো সিটি আওয়ামীলীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
সোহেল শাহরিয়ার ভয়ভীতি উপেক্ষা করে দেশে ফিরে আসার পর আবারও অনুসারী,কর্মী সমর্থক দের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্যতা ফিরে আসে।জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয়ে প্রতিদিন মিছিল মিটিং এ অংশ নিচ্ছেন ত্যাগী, পরীক্ষীত নেতা কর্মী, সমর্থক ও সোহেল অনুসারীরা। সকলের একটাই দ্বাবি সোহেল শাহরিয়ার এর ত্যাগের মূল্যায়ন করে যুবলীগ এ তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত করলে মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ তার নেতৃত্বে নতুন করে প্রাণ ফিরে পাবে।
Leave a Reply