নিউজ ডেস্ক: পাঁচ-পাঁচবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন অ্যাডভোকেট ছায়েদুল হক। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এই নেতা। ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর মারা যাওয়া ছায়েদুল হকের জীবদ্দশায় সম্বল বলতে ছিল পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দুটি টিনের ঘর। ১৪টি সেলাই দিয়ে ২০ বছর একটি শাল পরেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ এই সহচর।
নিজ গ্রাম নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের পূর্বাভাগ গ্রামের উত্তরপাড়ায় রয়েছে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া টিনের ঘর দুটি। দীর্ঘদিনের পুরোনো দুই ঘরের একটিতে থাকতেন মন্ত্রী আর অন্যটি ছিল তার বৈঠকখানা। গ্রামের সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসে কথা বলতেন বৈঠকখানায়। যদিও মন্ত্রীর ওই ঘরটি স্থানীয়দের কাছে ‘ডাক বাংলো’ হিসেবেই বেশি পরিচিত।
মন্ত্রী ছায়েদুল হকের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, পুরনো দুটি টিনের ঘরে শুধুমাত্র দুটি খাট ও কাঠের কিছু ফার্নিচার এবং কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার পড়ে আছে। বাড়িতে এলে ওই টিনের ঘরে পুরনো খাটেই ছায়েদুল হক ঘুমাতেন বলে জানিয়েছেন তার নিকট আত্মীয়রা। কোনও কিছুর প্রতি লোভ ছিল না তার।
ছায়েদুল হকের স্বজনরা বলেন, অর্থ-বিত্ত নিয়ে তার কোনও ভাবনা ছিল না। আমাদের শুধু বলতেন, একদিন সবকিছুর হিসাব দিতে হবে। তিনি কখনও অন্যায় কাজ করেননি। মন্ত্রী হয়েও সবসময় সাধারণ মানুষের মতো চলাফেরা করেছেন। গ্রামের মানুষদের তিনি বলতেন, আমি এমপি-মন্ত্রী না, আমি তোমাদের ছায়েদুল হক।
ছায়েদুল হকের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী ও নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাফি উদ্দিন বলেন, ছায়েদুল হকের মতো এমন সৎ নেতার মৃত্যু নেই। তিনি বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে।
নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের পূর্বাভাগ গ্রামের পশ্চিমপাড়াস্থ কল্লরপাড় পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়েরর কবরের মাঝখানে চিরনিদ্রায় শায়িত ছায়েদুল হক। হাওর বেষ্টিত এই উপজেলার সার্বিক উন্নয়নে জড়িয়ে আছে তার নাম। জেলা সদরের সঙ্গে নাসিরনগরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের এক মাইলফলক। এখনও তার কয়েকশ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রয়েছে।
Leave a Reply