9 June- 2023 ।। ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

“আবরার হত্যাকান্ড ও আমার নিঃশব্দ রক্তক্ষরণ “

“”এইচ এম মাসুম””

স্বপ্ন ছিলো তার আকাশ ছোঁয়ার!

তাই আকাশচুম্বী অট্টালিকা বানানোর মূল বুদ্ধিটা বের করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশেরই সন্তান ফজলুর রহমান খান। যাকে ‘স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আইন্সটাইন’ বলা হয়।

১৯৬৯ সাল…
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সিয়ার্স এন্ড কোং ১১০ তলা নির্মাণের পরিকল্পনা করলো। কিন্তু ১০১ একরের মাঝারি সাইজের জায়গায় এরকম স্থাপনা বানানোটা খুব সহজ ছিলো না। সিয়ার্স এন্ড কোং এর স্বপ্নপূরণ করতে এগিয়ে এলেন বাঙালী প্রকৌশলী ফজলুর রহমান খান।
তিন বছরের প্রচেষ্টায় আকাশে মাথা তুলে দাঁড়ায় ১১০ তলা উঁচু সিয়ার্স টাওয়ার।

নাম বদলে গিয়ে এখন সেটি উইলস টাওয়ার হয়েছে। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত এটিই ছিল বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন। এর আগে আমেরিকার প্রথম একশো তলা ভবন জন হ্যানকক সেন্টারের নকশাও করেছিলেন এই স্কাইস্ক্র‍্যাপারের জনক।

১৯২৯ সালে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ফজলুর রহমান খান। পুরান ঢাকার আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৪ সালে ম্যাট্রিক এবং ১৯৪৬ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইন্টার পাস করেন ফজলুর রহমান খান। এরপর কলকাতার শিবপুরে বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন।

কিন্তু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হওয়ায় মাঝপথেই ফিরে আসতে হয় ঢাকায়। আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমান বুয়েট) থেকে বাকী পড়ালেখা শেষ করেন তিনি।

১৯৫২ সালে স্কলারশীপ নিয়ে আমেরিকা গিয়েছিলেন পড়তে। স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং তত্ত্বীয় ও ফলিত মেকানিক্সে ডাবল এমএস করার পর ফজলুর রহমান ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে।

পিএইচডি শেষ করে দেশে ফিরে এসে যোগ দিয়েছিলেন আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমান বুয়েট)। ১৯৬০ সালে স্কিডমোর কোম্পানির আমন্ত্রনে আবার আমেরিকা পাড়ি জমান তিনি।

ফজলুর রহমান খানের বান্ডেল টিউব স্ট্রাকচার অনুসরণ করেই বৈপ্লবিক একটা পরিবর্তন এসেছে। একশো তলা বিল্ডিং বানানো ফর্মুলা তিনিই আবিষ্কার করেছিলেন। এই ফর্মূলাকে ভিত্তি ধরেই নির্মিত হয়েছে দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা আর মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস টাওয়ার। জেদ্দা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হজ্জ্ব টার্মিনাল এর ডিজাইনও করেছেন ফজলুর রহমান খান।

১৯৮২ সালে, মাত্র ৫৩ বছর বয়সে সৌদি আরবের জেদ্দায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ক্ষনজন্মা এই প্রতিভাবান প্রকৌশলী।

আমেরিকার শিকাগো শহরের মেয়র অফিসের সামনে তাঁর একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি-স্মারক রয়েছে। তাঁর সন্মানে উইলিস টাওয়ারের পাদদেশে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।

গতবছর তার আটাশি তম জন্মদিনে তাঁর সন্মানে গুগল ডুডল প্রকাশ করেছিল।

মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশীদের যে আন্দোলন, তার নেতৃত্ব দেন তিনি। ‘বাংলাদেশ ডিফেন্স লীগ’ ও ‘বাংলাদেশ ইমার্জেন্সি ওয়েলফেয়ার আপিল’ নামে দুটি সংগঠন গঠন করে মহান মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরেন বিশ্ববাসীর কাছে।

১৯৯৯ সালে ফজলুর রহমান খানের স্মরণে একটি ডাকটিকিটটি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ, যেখানে এফ আর খানের পেছনে দেখা যেতো পৃথিবীর বুকে তাঁর অমর হয়ে থাকার অন্যতম কারণ সিয়ার্স টাওয়ার। একই সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে মরনোত্তর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করে।

এফ আর খান বলতেন…
‘মানুষ বাঁচে তার স্বপ্নের জন্য।
মানুষ বাচে তার স্বপ্ন পূরনের জন্য।
মাতৃভূমি ছড়ে যেতে কেউই চায়না।
কিন্তু আমি মাতৃভূমি ছেড়েছি স্বপ্নকে বাচাতে।’

★আবরার হয়তো এফআর খানের চেয়েও বড় কোন স্বপ্ন দেখতো। শুরুতেই শেষ হয়ে গেলো আবরারের স্বপ্ন!
আবরার হত্যাকান্ড আমায় আবার ও স্তব্ধ করে দিলো!
আমার বুকের ভিতরে ক্ষত-চিহ্নটা আবার বেড়ে গেলো।
আমি হৃদয়ের নিঃশব্দ রক্ত ক্ষরণের টের পেয়েছি!
যেটা হয়তো আমি টের পেয়েছি।আমি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্ররাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।আমি দেখেছি একটি সাদামাটা নির্ঝঞ্ঝাট মেধাবী ছাত্র বা ছাত্রীর স্বপ্ন কতটা জীবনবাদী,বাস্তবতাকে সঙ্গে নিয়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দ্যাখাটা কিন্তু সহজ ব্যাপার নয়।পাওয়ারী চশমার ফাঁকে বইয়ের দিকে নজর দেয়া চোখজোড়া আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সে স্বপ্নটা মাঝপথে দুঃস্বপ্নে পরিনত হয়,সেটা কী মেনে নেয়া সম্ভব?
-না
তবুও মেনে নিতে হয়।
কিন্তু আর কত!

“বুয়েটের আবরার হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই”

লেখক:রাজনীতিবিদ,গবেষক।

Sharing is caring!





More News Of This Category


বিজ্ঞাপন


প্রতিষ্ঠাতা :মোঃ মোস্তফা কামাল
◑উপদেষ্টা মহোদয়➤ সোহেল সানি
◑নজরুল ইসলাম মিঠু ◑তারিকুল ইসলাম মাসুম ◑এডভোকেট হুমায়ুন কবির(আইন উপদেষ্টা)
প্রধান সম্পাদক : মোঃ ওমর ফারুক জালাল

সম্পাদক: মোঃ আমিনুল ইসলাম(আমিন মোস্তফা)

নির্বাহী সম্পাদক: শফি মাহমুদ

বার্তা ও বানিজ্যিক সম্পাদক: বজলুর রহমান
প্রধান প্রতিবেদকঃ লাভনী আক্তার

ইমেইল:ajsaradin24@gmail.com

টেলিফোন : +8802-57160934

মোবাইল:+8801725-484563, বার্তা সম্পাদক+8801716-414756
টপ